Image default
স্বাস্থ্য

হার্ট অ্যাটকের লক্ষণ এবং যাদরে ঝুঁকি বেশি

হার্ট অ্যাটকের লক্ষণ এবং যাদরে ঝুঁকি বেশি

হৃদপিন্ড সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের কাজ করে থাকে । হৃদপিন্ড একমাত্র অঙ্গ, যা সারাক্ষণ কাজ করে এবং কখনোই বিশ্রাম নেয় না । তো হৃদপিন্ড কখন ঝুকির মধ্যে পড়ে ?  উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার , উচ্চ মাত্রার কোলেস্টোরল ,  অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস , মাদকদ্রব্য গ্রহন , মানসিক চাপ এবং শারীরিক পরিশ্রম না করা হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ । হৃদপিণ্ডের কোনো শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে ।

হার্ট অ্যাটকের লক্ষণ

সাস্থ্য সচেতন মানুষ মাত্রই হার্ট অ্যাটকের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাইবেন । আমরা প্রথমেই হার্ট অ্যাটকের লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করবো

বুকে ব্যাথা

বুকের মাঝখানে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়ে বাম কাঁধ বা চোয়ালের দিকে যেতে পারে ।

শ্বাসকষ্ট হলে

হঠাৎ করে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় । এটা খুবই খারাপ লক্ষণ । মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে পানি জমার কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে । অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া এবং মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ।

অতিরিক্ত ঘাম হলে

যদি অতিরিক্ত ঘাম হয় তবে সেটাও হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।

পালস উঠানামা করলে

কোনও কারণ ছাড়াই পালস উঠানামা করলে । অনেক বেশি নার্ভাস থাকলে বা দৌড়াদৌড়ি করলে পালস রেট ওঠা-নামা করতে পারে । তবে যদি  কোনও কারণ ছাড়াই পালস উঠানামা করে, তবে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের আগে এমনটা হয়ে থাকে ।

আরো পড়ুন

ইকোকার্ডিওগ্রাফি কি : কেন করা হয়
প্রচন্ড মাথা ব্যথা

যদি ঠান্ডা বা এলার্জি জনিত সমস্যা ছাড়াই নিয়মিত মাথা ব্যথা হয়, তবে সতর্ক হওয়া উচিত । কারণ, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হল প্রতিদিনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা ?

ক্লান্তি অনুভব করা

তেমন কোন পরিশ্রম ছাড়া ক্লান্ত হয়ে পড়া । এবং  যদি অল্পতেই বুক ধড়ফড় করে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত । এটি  হার্টের সমস্যার একটি  লক্ষণ ।

দীর্ঘ দিন কাশির সমস্যা

যদি দীর্ঘ দিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সঙ্গে সাদা বা ঘোলাটে কফ বের হয় । তবে বুঝতে হবে  হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। তবে কাশি সব সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। যদি কফের সঙ্গে নিয়মিত রক্ত বের হয় তবে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকেই যায়।

এছাড়াও বুকে চাপ অনুভব করা , শরীর নীল হয়ে যাওয়া , ইত্যাদিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ।

HEART-ATTACK-2.jpg
ছবি – সংগ্রহিত

 

যাদের ঝুঁকি বেশি

এই অংশে আমরা আলোচনা করবো কোন কোন কারণে হার্ট অ্যাটকের ঝুকি বৃদ্ধি পায়

রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেলে

তেল চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় । আর রক্তে কোলেস্টেরল  বৃদ্ধি পেলে হার্টে ব্লক তৈরী হয় । হার্টে ব্লক হলে হার্ট অ্যাটকের ঝুকি অনেকগুন বেড়ে যায় ।

উচ্চ রক্তচাপ

যাদরে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের হার্ট অ্যাটকের ঝুকি অনেক বেশি । অতএব যাদরে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের সতর্ক থাকা জরুরি । সেইসাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেষ্টা করতে হবে ।

মানসিক চাপ

মানসিক চাপ শরীরে করটিসোল ও অ্যাড্রিনালিন নামক হরমোন বৃদ্ধি করে। এসব হরমোন রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং রক্তনালীকে অনমনীয় করে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায়।

রাত জাগা

যদি ঘুমে অনিয়ম করা হয় তবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি বেড়ে যায় । গবেষকরা বলেছেন যদি  প্রতিরাতে সাত ঘণ্টা বা আরো বেশি ঘুমানো হয় সেই সাথে নিয়মিত শরীরচর্চা করা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও ধূমপান না করা হয় তবে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা  ৮৩ শতাংশ কমে যায় । অতএব রাত জাগার অভ্যাস ছাড়ুন এবং রাতে দ্রুত ঘুমানোর অভ্যাস করুন ।

আরো পড়ুন

জরায়ু মুখের ক্যান্সার কেন হয় ?
জীবন নিয়ে হতাশা

যারা জীবন নিয়ে অসুখী তাদেরও  হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে । হতাশ ব্যক্তিরা সব সময় মানুসিক ডিপ্রেশনে ভোগেন । অন্যদিকে আশাবাদী ও সন্তুষ্ট মানুষেরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন ।

ধুমপান

যারা নিয়মিত ধুমপান করেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে । ধূমপানের ফলে অ্যাথেরোমা নামক চর্বিজাতীয় পদার্থ সহজে জমা হয় । রক্ত হার্ট ও শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন বহন করে , কিন্তু সিগারেটের ধোঁয়ার কার্বন মনোক্সাইডের কারণে এই অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটে । সিগারেটের নিকোটিন শরীরে অ্যাড্রেনালিন উৎপাদনে সহায়তা করে । এতে হাটের স্পন্দন দ্রুত হয় এবং ব্লাডপ্রেশার বেড়ে যায় । এর ফলে হার্টকে বেশি পরিশ্রম করতে হয় । ধূমপানের কারণে রক্ত জমাট বাঁধারও সম্ভাবনা থাকে । এই সবকিছুই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ।

এছাড়াও ডায়াবেটিসের সমস্যা, নিয়মিত ব্যায়াম না করা এবং পরিবারে কারো হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের ধমনির অসুখের ইতহাস থাকলে হার্ট অ্যাটাক এর ঝুকি থাকে ।

Related posts

শীতে শিশুর যত্ন ও পরিচর্যা

jibondharaa

শুচিবাই বা ওসিডি কেন হয় ? এর লক্ষণ ও চিকিৎসা

jibondharaa

কোন কোন খাবারে আয়রন পাওয়া যায় : শরীরে আয়রনের প্রয়োজনীয়তা

jibondharaa

Leave a Comment