ভিটামিন ডি আসলে একটি স্টেরয়েড হরমোন । এটি চর্বিতে দ্রবণীয় যা শরীরের ক্যালসিয়াম , ফসফেট ইত্যাদির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে । ভিটামিন ডি অস্থির কাঠামো তৈরী ও ঘনত্ব বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । শরীর সুস্থ ও ফিট রাখতে ভিটামিন ডি এর প্রয়োজনিয়তা অনেক বেশি । ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্যের রশ্মি । সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে সূর্যের রশ্মিতে ভিটামিন ডি বেশি থাকে । এছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ।
শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির ফলে নানা রকম শারীরক সমস্যার সৃষ্টি হয় । এজন্য শরীরে ভিটামিন ডি ঘাটতির উপসর্গ গুলো জানা প্রয়োজন ।
ভিটামিন ডি এর ঘাটতির উপসর্গ :
শিশুদের ক্ষেত্রে :
শিশুদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে তার উপসর্গ তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হয় । ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের হাড় ঠিকভাবে বৃদ্ধি পায় না অর্থাৎ শিশুদের হাড় নরম ও আকাবাকা হয়ে যায় । ফলে এটা রিকেটস নামক একটি রোগে পরিনত হয় । শিশুদের রিকেটস রোগে পা বেকে যায় এবং মাথার খুলিও বড় হয়ে যেতে পারে । এ রোগে বেশিদিন ভুগলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিও ব্যাহত হতে পারে ।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে :
বয়স্কদের শরীরে তীব্রভাবে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে অস্টিওমেলাসিয়া নামক অসুখ দেখা দেয় । যার ফলে পেশির দুর্বলতা , সিড়ি আরোহন করতে কষ্ট অনুভব , মেঝে বা চেয়ার থেকে উঠতে বসতে ভিষন কষ্ট পাওয়া , পায়ের মাংসপেশিসমূহ হাড়ের সাথে জড়িয়ে ধরার মত মনে হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে ।
এছাড়াও ভিটামিন ডি ঘাটতির ফলে সবার শরীরে সাধারণ যে উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলো হলো :
১ । অসুস্থতা বেড়ে যাওয়া :
ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে । ফলে বিভিন্ন রকম শরীরিক অসুস্থতা দেখা দিতে থাকে । এটা ভিটামিন ডি ঘাটতির প্রধান লক্ষন ।
২ । হাড় ও পিঠে ব্যাথা :
ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে । শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হলে হাড় ও পিঠে ব্যাথার মতো সমস্যা দেখা দেয় ।
৩ । মাংসপেশিতে ব্যাথা :
ভিটামিন ডি শরীরের মাংসপেশিতে দৃঢ়তা প্রদান করে । তাই ভিটামিন ডি এর অভাবে মাংসপেশিতে ব্যাথা অনুভুত হয় ।
৪ । অল্পতে ক্লান্ত হয়ে পড়া :
শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতির ফলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়ার পরও শরীরে ক্লান্তভাব কাটে না ।
ভিটামিন ডি এর উৎস :
- ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস সূর্যের আলো । সূর্যের কিরণ ত্বক শুষে নেয় এবং দেহে ভিটামিন ডি বৃদ্ধি করে । নিয়মিত সকাল বেলার সূর্যের আলো গ্রহন করলে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থেকে বেচে থাকা সম্ভব ।
- বেশ কিছু খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় । যেমন- স্যামন মাছ , মাছের লিভার , মাশরুম , দই , পনির ইত্যাদি ।
- সূর্যের আলোতে বেড়ে ওঠা হাস-মুরগির ডিমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় । সূর্যের আলোতে বিচরণ করা গবাদি পশুর দুধেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ।
- এছাড়া গরু-ছাগলের কলিজা , মাছের কাটা ও মাংসের হাড়েও ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ।
আরো পড়ুন ভিটামিন ‘এ ‘ এর উৎস : কোন কোন খাবারে পাওয়া যায় ভিটামিন সি এর উৎস । শরীরে প্রতিদিন কতটুকু প্রয়োজন