মানুষের জীবন পরিচালনায় সময় নির্নয় করা অপরিহার্য । আর এ জন্যই পৃথীবির শুরু থেকেই মানুষ বিভিন্ন উপায়ে সময় নির্নয় করতো । এখন আমরা অধুনিক যে সময় নির্নয়ক মাধ্যম ঘড়ি ব্যবহার করি, সেটা একদিনে হয়নি । প্রত্যেকটি যুগে সময় নির্ধারণের নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে সেটা আরো আপডেট হয়েছে । আজ আমরা ঘড়ি আবিস্কারের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো ।
বিশেষজ্ঞদের মতে সর্বপ্রথম ৫৫০০ বছর আগে মিশরের মেসোপটেমিয়ায় সময় নির্ধারণের উপায় বের করেন সেখানকার অধিবাসিরা । বিভিন্ন ধরনের সূর্যালোক, বালি ঘড়ি এবং জল ঘড়ি আবিষ্কারের মাধ্যমে সময় নির্ধারণের চেষ্টা করতেন তারা । আমরা আজকের নিবন্ধে ঘড়ি আবিষ্কার কে করেন এবং এর ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করবো । তার আগে আসুন জেনে নেই সময় নির্ধারনের ইতিহাস ।
দিন – রাতের সময় ভাগের ইতিহাস
ধারণা করা হয়, ছয় হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয় সাম্রাজ্যে সমস্ত দিনকে ১২ ঘন্টায় ভাগ করার প্রচলন শুরু হয় । এছাড়া খ্রিষ্টপূর্ব ২৭০০ অব্দে চীনারাও একইভাবে সময়ের ভাগ করে নিয়েছিল । প্রাচিন গ্রীকদের মধ্যেও প্রচলিত ছিল দিন ও রাতকে ১২ ঘন্টায় ভাগ করার এই পদ্ধতি । ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়, খ্রিষ্টীয় তেরো শতকে প্রথম সমান সময়ের ঘন্টার হিসাব চালু করা হয়। মিশরীয় গণিত বিদ আবু হাসান এই প্রথা চালু করেন। তিনিই প্রথম দিনকে সমান ১২ ঘন্টায় ভাগ করে নেন । ফলে দিন-রাত মিলে মোট ২৪ ঘন্টার প্রচলন শুরু হয় ।
ঘড়ি আবিষ্কারের বিভিন্ন পর্যায়
সুর্য ঘড়ি
প্রাচীনকালের ইতিহাস অনুযায়ী ঘড়ির পূর্বপুরুষ হিসেবে সূর্যঘড়িকে চিহ্নিত করা হয় । কারণ, ইতিহাস বেত্তাদের মতে এটিই পৃথিবীর প্রথম যান্ত্রিক ঘড়ি । সূর্যঘড়ির ব্যবহার শুরু অনেক কাল আগে থেকেই । ধারণা করা হয় মিশরীয়রাই প্রথম প্রকৃতিনির্ভর সূর্য-ঘড়ি নির্মাণ করেছিল আর ইউরোপিয়ানরা এই তত্বের উপর ভিত্তি করে প্রথম যান্ত্রিক ঘড়ি আবিষ্কার করেন ।
অনেকের মতে, ব্যবিলনে প্রথম প্রকৃতিনির্ভর ঘড়ি অর্থাৎ সূর্যঘড়ি নির্মিত হয়েছিল যা পরে প্রাচীন মিশরে আরো উন্নতি লাভ করে । সূর্যঘড়ি পরবর্তিতে গ্রীস এবং রোম সাম্রাজ্যে বিস্তার লাভ করে এবং প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়, তাছাড়া এর আকারও ছোট হয়ে আসে ।
আরো পড়ুন স্যার আইজাক নিউটনের সংক্ষিপ্ত জীবনী
প্রাচীন মিশরীয় জনগন দিনকে ১২ ভাগে ভাগ করে একটা কাঠির ছায়ার পৃর্ণন গতির উপর নির্ভর করে সময় নির্ণয় করত। মুলতঃ এই পদ্ধতিকে সানডায়াল বা সূর্যঘড়ি পদ্ধতি নামে উল্লেখ করা হয় । সূর্যঘড়ির গঠন খুব সাধারণ ধরণের । এই ঘড়িতে একটি লম্বা কাঁটা বা নির্দেশক থাকে। এটি এমনভাবে একটি ডায়ালের সাথে সংযুক্ত থাকে যাতে কাঁটাটির ছায়া ডায়ালটিতে পড়ে । ডায়ালটির গায়ে ঘন্টা ও মিনিট নির্ণয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন চিহ্ন দেওয়া থাকে । দিনের বিভিন্ন সময়ে কাঁটাটির ছায়া ডায়ালের বিভিন্ন স্থানে পড়তো, এবং এই ছায়া থেকে সময় নির্ণয় করা হতো ।
সূর্যঘড়ি এমন একটি কৌশল যা সূর্যের অবস্থান নির্ণয়ের মাধ্যমে সময় নির্ধারণ করে থাকে । কিন্তু রাতের আঁধারে এবং মেঘলা দিনে সূর্যঘড়ি দিয়ে সময় নির্ণয় করা সম্ভব ছিলনা । তাছাড়া সূর্যঘড়িতে ঘন্টা-কোণগুলো পুরোপুরি সঠিক থাকে না, তাই এদের সাহায্য একেবারে নিখুঁত সময় নির্ণয় করা সম্ভব ছিল না।
তাই,পরবর্তীতে মুসলিম বিজ্ঞানী আবুল হাসান ১৩৭১ সালে ত্রিকোণমিতি এবং জ্যামিতির সূত্র প্রয়োগ করে সানডায়ালের আধুনিক ভার্সন সংস্করণ করেন । আবুল হাসান সর্বপ্রথম সানডায়ালে একটি কাঁটা নির্দিষ্ট কোণে স্থাপন করেন যার সাহায্যে ঘন্টা মিনিট নির্ণয় করা যেত । এভাবে দিনের আলো ব্যবহার করে ঘড়ি দেখার কাজ চলত। কিন্তু এ ঘড়িতেও কিছু সমস্যা থাকার কারণে মানুষ নতুন ঘড়ি আবিষ্কারের চেষ্টা করতে থাকে ।
মোমবাতি ঘড়ি
মোমবাতি আবিষ্কারের পর থেকে চিনে সময় নির্ণয়ে মোমবাতির ব্যবহার শুরু হয় । মোমবাতি ঘড়িতে সমান সাইজের (১২ ইঞ্চি লম্বা ) ৬টি মোমবাতি পাশাপাশি রাখা হতো । আবার প্রত্যেকটি মোমবাতি সমান পুরুত্বের হত । মোমবাতিগুলোর গায়ে প্রতি ১ ইঞ্চি অন্তর অন্তর দাগ কাটা থাকতো । প্রতিটি মোমবাতি চার ঘন্টা জাবত জ্বলত। তাই মমবাতির গায়ে কাটা প্রতিটি দাগ ২০ মিনিট সময় প্রদর্শন করত । একটি নির্দিষ্ট আকৃতির মোমবাতি পুড়ে শেষ হতে কত সময় লাগছে তা থেকে সময় নির্ণয় করা হতো । মোমবাতির গায়ে বিভিন্ন রঙের মাধ্যমে সময় নির্দেশক দাগ দেওয়া হতো । পৃথিবীর বহু দেশে এই ধরণের ঘড়ির ব্যাপক প্রচলন ছিল ।
আরো পড়ুন বেগম সুফিয়া কামালের সংক্ষিপ্ত জীবনী
জলঘড়ি
অতীত কালে সময় নির্ণয়ের আরেকটি পন্থা ছিল জলঘড়ি । একটি ছোট নলের মাধ্যমে পানি এক চৌবাচ্চা থেকে অন্য চৌবাচ্চায় প্রবাহিত করানো হতো । এই প্রবাহিত পানির পরিমাণের উপর নির্ভর করে সময় গণনা করা হতো । বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচীনকালে সূর্যঘড়ির পাশাপাশি প্রচলন ছিল জলঘড়ির। বিশেষজ্ঞদের ধারণা করা হয় প্রায় ৫০০০ বছর আগে চীনদেশে জলঘড়ির প্রচলন ছিল ।
প্রাচীন ইরানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বছরের বড় দিন ও ছোট দিন নির্ণয়ে সমর্থ হয়েছিল জলঘড়ির মাধ্যমে । এই জলঘড়ির মাধ্যমেই বছরকে বিভিন্ন ঋতুতে বিভক্ত করা হয়েছিল পারস্য শাসন আমলে । পৃথিবীর বহুদেশে এই জলঘড়ি জনপ্রিয়তা পায় । এটিতে সূর্যঘড়ির মত অসুবিধা ছিল না, ফলে এটি দিনে-রাতে ব্যবহার করা যেত ও যেকোন স্থানে বহন করা যেত। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে এই ঘড়ি ব্যবহার করা হতো । তবে জলঘড়িরও কিছু অসুবিধা ছিল । এই ঘড়ি জাহাজে ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না । এছাড়া শীতপ্রধান দেশগুলোতে এ ঘড়ি ছিল মোটামোটি অচল । কারণ, এ ঘড়ির পানি জমে বরফে পরিণত হলেই ঘড়ি বন্ধ হয়ে যেত । ফলে মানুষ এই জলঘড়ির বিকল্প খোঁজা শুরু করে ।
ঘড়ির আধুনিক সংস্করণ
অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ঘড়ি
১১ শতকে চীনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী হরলজিস এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সু সং একত্রে কাজ করে পানি চালিত একটি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ঘড়ি আবিষ্কার করেন । তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ঘড়ি সর্বপ্রথম গ্রীক পদার্থবিদ আর্কিমিডিস খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দে আবিষ্কার করেন । তিনি চাকাযুক্ত ঘড়ি তৈরী করেন । তখন গির্জাগুলোতে এ ধরণের ঘড়ির প্রচলন করা হয় । এসব ক্ষেত্রে ভারি কোনো বস্তুকে একটি চাকার সাথে যুক্ত করা হতো । ফলে মহাকর্ষ শক্তির টানে চাকাটি ঘুরতে চাইতো । চাকার এই ঘুর্ণনকে বিশেষ কৌশলে নিয়ন্ত্রন করা হতো যাতে চাকাটি ধীরে ধীরে ঘুরে । এই চাকার সাথে লাগিয়ে দেওয়া হতো সময় নির্দেশক কাঁটা । পরবর্তী সময়ে এ ধরণের ঘড়িতে ডায়ালের প্রচলন শুরু হয় । ১২০৬ সালে মুসলমান জ্যোতির্বিজ্ঞানী আল-জাহেরি নামাজ ও রোজার সময় সঠিক ভাবে নির্ণয় করার জন্য পানি চালিত অন্য একটি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ঘড়ি আবিষ্কারকরেন যাতে একবার পানি পূর্ণ করে দিলে ঘড়ি অনেক দিন এমনকি এক বছরও চলতে পারতো ।
ম্যাকানিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ঘড়ি
১৪৬২ সালে একটি ঘড়ি তৈরী করা হয় যার মধ্যে বিভিন্ন সাইজের গিয়ার বক্স সংযুক্ত করা হয় । এই ঘড়িতে সর্বপ্রথম ঘন্টা, মিনিট এবং সেকেন্ডের সুক্ষ কাঁটা ব্যবহার করা হয়েছিল । ১৪ শতকের দিকে ম্যাকানিক্যাল ঘড়ি সারা পৃথিবীতে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে । যদিও মধ্যেযুগে ক্লকের প্রচলন অনেক বেড়ে যায়, তবে এদের কোনটাই সঠিক সময় দিত না । ম্যাকানিক্যাল ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন ? ১৩৬৪ সালে ফ্রান্সের রাজা পঞ্চম চার্লস একটি ঘড়ি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেন, যার নির্মাণ শেষ হয় ১৫ বছর পর । একজন বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা এটি নির্মান করেন তবে তার নাম জানা সম্ভব হয়নি ।
আরো পড়ুন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সংক্ষিপ্ত জীবনী
দোলক ঘড়ি
বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ১৫৮০ সালে প্রথম দোলকের ধর্ম সম্পর্কিত সূত্র আবিষ্কার করে ফেলেন । এই সুত্র পরবর্তীতে ঘড়িতে ব্যবহার করা হয় । ১৬৭৩ সালে ওলন্দাজ গণিতবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ান হাইগেন্স একটি ঘড়ি তৈরী করেন যা ছিল দোলক ঘড়ির একটি উন্নত সংস্করণ । তাঁর নামানুসারে এই ঘড়ির নাম দেওয়া হয় হাইগেনের ঘড়ি ।
পকেট ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন
ঘড়িতে ঝুলন্ত ভারি বস্তু ব্যবহারের চলন উঠে যাওয়ার পর পকেটে বহনযোগ্য ছোট ঘড়ি তৈরি হয়, এগুলোই ‘ওয়াচ’ নামে পরিচিত । এটাই আমাদের বর্তমান যুগের ঘড়িগুলোর আদিরূপ । এ ধরণের ঘড়িগুলো গোলাকার ডিম আকৃতির ছিল, এজন্য এগুলোকে বলা হতো ‘ নুরেমবার্গের ডিম ‘। পকেট ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন ? ১৬৭৫ সালে ক্রিশ্চিয়ান হাইগেনস এবং রবার্ট হোক সর্বপ্রথম পকেট ঘড়ি তৈরি করেন ।
হাত ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন
১৫৭১ সালে Robert Dudley সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডের রাণী এলিজাবেথ-১ কে একটি উপহার দেন। প্রথম দিকে হাত ঘড়িছিল শুধুমাত্র মেয়েদের ব্যবহার করার জন্য। ছেলেদের জন্য পকেট ঘড়ি । তাছাড়া মিলিটারি সৈন্যদেরও হাতঘড়ি ব্যবহার করার ডকুমেন্ট পাওয়া যায় । সর্বপ্রথম হাত ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন তার সঠিক ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি । তবে অনেকের মতে ১৫২৪ সালে, পিটার হেনেলিন প্রথম পকেট ঘড়ি তৈরি করেছিল । আবার অনেকেই বলেন, আর্কিমিডিস প্রথম হাতে ঘড়ি পরিধান করেন। তবে এই কথার সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি।
ডিজিটাল ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন
ডিজিটাল ব্যাটারী চালিত ঘড়ির আগমনে কাঁটার ঘড়ির আর চল নেই । এ ঘড়ির সাহায্যে সরাসরি সংখ্যার দ্বারা সময় জেনে নেওয়া যায় । এই ঘড়িতে প্রতি ৬০ সেকেন্ড পর পর মিনিটের সংখ্যা এবং ৬০ মিনিট পর পর ঘন্টার সংখ্যা পরিবর্তন হয় । ডিজিটাল ঘড়ির সাহায্যে অতি সূক্ষ্ম সময়ও জানা সম্ভব হয় । ১৮৮৩ সালে জোসেফ পালয়েবার সর্বপ্রথম পকেটে বহনযোগ্য ডিজিটাল ঘড়ি তৈরি করেন । এরপর ১৯৭০ সালে LED ডিসপ্লে যুক্ত প্রথম হাতঘড়ির প্রচলন হয় । হ্যামিল্টন ওয়াচ কোম্পানি ‘ পালসার ‘ নামের এই ঘড়ি তৈরি করে । এরপর নানা ঘড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানির আবির্ভাব ঘটে । এদের মধ্যে প্রতিযোগীতার ফলে নতুন নতুন সব ডিজিটাল হাতঘড়ির আবির্ভাব হয় । আমাদের দেশে ক্যাসিও কোম্পানির ডিজিটাল ঘড়িগুলো অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে ।
এটমিক ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন
এটমিক ঘড়ি হলো সবচেয়ে সঠিক এবং সুক্ষ্মভাবে সময় নির্ণয় করার যন্ত্র। এই ঘড়ির সাহায্যে এক সেকেন্ডের কয়েক লক্ষ ভাগের এক ভাগ মাপা সম্ভব হয় । ১৮৭৯ সালে লর্ড কেলভিন সর্বপ্রথম এটমিক ঘড়ি ব্যবহারের প্রস্তাব দেন । ১৯৪৯ সালে এটমের কম্পন মাপার যন্ত্র আবিষ্কার করা হয় । তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা ঘড়ি তৈরি করার জন্য বিভিন্ন অ্যাটম নিয়ে কাজ করতে থাকে।
১৯৫৫ সালে সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর কম্পনের সাহায্যে প্রথম ঘড়ি তৈরি করা হয়। এটমিক ঘড়ির ক্ষেত্রে সেকেন্ডের সংজ্ঞা হল ‘ শূন্য কেলভিন তাপমাত্রায় একটি অনুত্তেজিত সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর ৯, ১৯২, ৬৩১,৭৭০ টি স্পন্দন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে তাকে ১ সেকেন্ড বলা হয় ।
স্মার্টওয়াচ কে আবিষ্কার করেন
হাতঘড়ির সর্বাধুনিক রূপ হচ্ছে স্মার্টয়াচ। আগেকার সাধারণ ডিজিটাল হাতঘড়িতে ক্যালেন্ডার, ক্যালকুলেটর প্রভৃতি থাকলেও সর্বপ্রথম স্মার্টওয়াচ চালু হয় ২০১০ সালে । এই স্মার্ট ওয়াচগুলোতে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ চালানো যেত। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্টওয়াচে অডিও-ভিডিও পেয়ার, ক্যামেরা, এফ এম রেডিও, ব্লুটুথ, জিপিএস, ইন্টারনেট, অয়াইফাই সব ধরনের প্রযুক্তিই যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক স্মার্ট অয়াচগুলোর সাথে একটি স্মার্টফোন দিয়ে যা যা করা যায় তার প্রায় সবই এখন করা যাচ্ছে স্মার্টওয়াচ দিয়ে। এছাড়া স্মার্টওয়াচ খুব সহজেই স্মার্টফোনের সাথে ব্লুটুথ কিংবা ওয়াইফাই দিয়ে যুক্ত করে স্মার্টফোনের কল কিংবা মেসেজ রিসিভ করা যায়। হাঁটার সময় স্টেপ কাউন্ট, হার্টবিট নির্ণয়, ঘুমের হিসাব রাখা ইত্যাদি কাজও আজকাল করা যাচ্ছে স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে। প্রায় সব স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আজকাল স্মার্টওয়াচ নির্মাণে মনোযোগ দিয়েছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে আরও উন্নতি ঘটবে স্মার্টওয়াচের।
তবে একটা কথা কী ! এত এত আবিষ্কার দিয়েও কিন্তু সময়কে ধরে রাখার কোন ব্যবস্থা কিন্তু মানুষ করতে পারেনি । আর তা কখনো সম্ভবও নয়, কারণ — TIME AND TIDE WAITS FOR NONE.