Image default
স্বাস্থ্য

মারাত্মক সংক্রামক রোগ হেপাটাইটিস বি, এর লক্ষণ ও চিকিৎসা

মারাত্মক সংক্রামক রোগ হেপাটাইটিস বি, এর লক্ষণ ও চিকিৎসা

হেপাটাইটিস বি (HBsAg) একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা যকৃত বা লিভার কে আক্রমণ করে । হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (HBV) এর আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে । হেপাটাইটিস নিয়ে উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সারা বিশ্বে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে সংক্রমিত দশজনের মধ্যে নয়জনই জানেন না যে তার শরীরে তিনি এই ভাইরাস বহন করছেন । বিদেশে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, স্বেছায় রক্তদান কিংবা গর্ভকালীন রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে অনেকের হেপাটাইটিস বি এবং কখনো কখনো হেপাটাইটিস সি ধরা পড়ে । আজ আমরা জনবো হেপাটাইটিস বি কেন হয় , হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে ।

হেপাটাইটিস বি কেন হয়
    • এই ভাইরাসটি রক্ত, কফ তথা দেহনিঃসৃত তরলের মাধ্যমে ছড়ায় ।
    • আক্রন্ত মায়ের মাধ্যমে জন্মের সময় শিশু আক্রান্ত হতে পারে ।
    • শিরায় মাদক দ্রব্যের ব্যবহার ।
    • অরক্ষিত যৌনমিলন ।
hepataitis-B.jpg
হেপাটাইটিস বি

এছাড়াও রক্ত আদান-প্রদান, ডায়ালাইসিস, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে বসবাস, সংক্রমণের হার বেশি এমন স্থানে ভ্রমণ প্রভৃতি মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায় ।

হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ

অধিকাংশ সময় সংক্রমণের প্রথম দিকে কোন লক্ষন প্রকাশ পায় না ।

  • তবে অনেক ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, চামড়া হলুদ হওয়া, ক্লান্তি, পেট ব্যাথা, প্রস্রাব হলুদ হওয়া ইত্যাদি লক্ষন দেখা যায় । সাধারনত এই লক্ষনগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় ।
  • সংক্রমণের পর রোগের লক্ষন প্রকাশ পেতে ৩০ থেকে ১৮০ দিন সময় লাগতে পারে ।
  •  জন্মের সময় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ৯০% ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হন ।
  • যেখানে ৫ বছর বয়সের পর আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ১০% এরও কম এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন ।
  • দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগেরই কোন প্রাথমিক লক্ষন থাকে না ।
  • যদিও এক্ষেত্রে এটি ধীরে ধীরে লিভার সিরোসিস এবং যকৃতের ক্যান্সার এ রূপ নিতে পারে ।
  • দীর্ঘস্থায়ী আক্রান্ত হওয়া রোগীদের প্রায় ১৫ থেকে ২৫% মৃত্যুবরণ করতে পারে ।
আরো পড়ুন
লিভারের যত্ন : লিভার রোগের উপসর্গ : লিভার রোগের কারণ
প্রতিরোধ করার উপায়

হেপাটাইটিস-বি এর প্রতিরোধের প্রধান উপায় ভ্যাকসিন গ্রহন করা । হেপাটাইটিস-বি এর ভ্যাকসিনের  ডোজ ৪টি  ৷ প্রথম ৩টি একমাস পরপর এবং ৪র্থটি প্রথম ডোজ থেকে এক বছর পর  ৷ পাঁচ বছর পর বুস্টার ডোজ নিতে হয় ৷ এর মাধ্যমে শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে ৷

এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দুরে থাকা এবং সচেতনতায় হেপাটাইটিস-বি প্রতিরোধের অন্যতম উপায় ।

চিকিৎসা

এ রোগে আক্রান্তরা অনেকক্ষেত্রেই সুচিকিৎসা পান না । আর বাংলাদেশে হেপাটাইটিসে আক্রান্তদের একটা বড় অংশ ঝাড়ফুঁক, পানি পড়া, ডাব পড়া নেয়ার মতো কবিরাজি চিকিৎসার দ্বারস্থ হন ।

আরো পড়ুন
চুল পড়া রোধের কিছু ঘরোয়া টিপস

এমনটি না করে রোগলক্ষণ প্রকাশ পেলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার ৷ সাধারণত এর কোনো কার্যকরী চিকিৎসা নেই ৷ নিয়মিত চিকিৎসায় সুস্থ থাকা যায় কিন্তু আরোগ্য হওয়া যায় না ৷ এর মূল চিকিৎসা হলো রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখা ৷ গ্লুকোজের সরবত খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায় ৷ অড়হড় পাতা, ভুঁই আমলার পাতা ইত্যাদির রস খাওয়ায়ে উপকার পেয়েছেন বলেও অনেকে দাবি করেন ৷

হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির নিয়মিত তরল বা পানীয় গ্রহণ করতে হবে । এক্ষেত্রে লেবুর শরবত কার্যকরী । তাছাড়া মাংস জাতীয় খাবার কম খেতে হবে । শরীরের যত্নে সর্বদা সচেষ্ট হতে হবে । নিয়মিত ব্যায়াম করুন এতে আপনার শরীরের পরিপাক ক্ষমতা বেড়ে যাবে এবং পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করুন এবং পরিমিত মাত্রায় বিশ্রাম নিন ।

Related posts

হাইপো – থাইরয়েড কি : লক্ষণ ও চিকিৎসা ।

jibondharaa

এন্ডোস্কোপি কি ? এন্ডোস্কোপির নিয়ম

jibondharaa

শীতে ত্বকের বাড়তি যত্ন

jibondharaa

Leave a Comment