Image default
স্বাস্থ্য

কোলোনোস্কোপি কি , কোলোনোস্কোপি সম্পর্কে জানুন ।

কোলোনোস্কোপি কি , কোলোনোস্কোপি সম্পর্কে জানুন ।

কোলনের ভিতরের অংশ দেখার জন্য যে যন্ত্র ব্যাবহার করা হয় তার নাম কোলোনোস্কোপ । এই কোলোনোস্কোপ এর প্রথম ব্যবহার শুরু হয় ১৯৭০ সালে । কোলোনোস্কোপি পরিক্ষা চিকিৎসা বিজ্ঞানকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে । আজ আমরা কোলোনোস্কোপি সম্পর্কে জনার চেষ্টা করবো ।

কোলোনোস্কোপি কি

কোলোনোস্কোপি পায়ুপথ এবং কোলন বা বৃহদন্ত্রের একটি পরীক্ষা । কোলোনোস্কোপি পরীক্ষাটি পায়ুপথ ও কোলন রোগের চিকিৎসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে । খাদ্যনালী আমাদের মুখ থেকে শুরু হয়ে পেটের ভেতর দিয়ে পায়খানার রাস্তায় শেষ হয়, খাদ্যনালীর শেষের পাঁচ ফুটকে বলা হয় কোলন, পায়ুপথ ও মলদ্বার । খাদ্যনালীর এই অংশটিতে পায়খানা জমা থাকে । কোলোনোস্কোপিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় । শর্ট কোলনস্কপি এবং ফুল কোলনস্কপি ।

কোলোনোস্কোপি কখন করা হয়

কোলনের নিচের দিকে ক্যান্সারসহ পাইলস, ফিস্টুলা, এনাল ফিসার,  আলসারেটিভ কোলাইটিস, পলিপ, ইত্যাদি । তাই ডাক্তার রুটিনভাবে সবারই শর্ট কোলনস্কপির উপদেশ দেন । রোগীর কথাবার্তায় এবং উপসর্গে যদি সন্দেহ হয় তখনই ডাক্তার ফুল কোলনস্কপি করার জন্য উপদেশ দেন । বয়স যখন পঞ্চাশের ওপর হয় অথবা নিকটাত্মীয়ের কোলন ও রেকটাম ক্যান্সার থাকে তখন অল্প বয়সেও ফুল কোলনস্কপির উপদেশ দেয়া হয়।

কোন কোন লক্ষন দেখে কোলোনোস্কোপি করা হয়
Untitled-1.jpg
কোলোনোস্কোপি যে প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়

রোগী যখন পায়খানার রাস্তায় কোনো সমস্যায় ভোগেন যেমন, মলদ্বারে ব্যথা, ফুলা, পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া, পায়খানা ঘন ঘন হওয়া, পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়া, পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, পায়খানার সাথে আম যাওয়া । যাদের বর্তমানে কোনো সমস্যা নেই তাদের মধ্যে অনেকের কোলনস্কপি করতে হয় । যেমন যাদের বয়স পঞ্চাশের ওপর এবং যাদের নিকটাত্মীয়ের কোলন ক্যান্সার হয়েছে । এ ছাড়া, আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং ক্রনস ডিজিজে আক্রান্ত রুগির  ফলোআপের জন্য বা যাদের ক্যান্সার অপারেশন হয়ে গেছে তাদের পরবর্তী ফলোআপের জন্য ।

আরো পড়ুন..
ইকোকার্ডিওগ্রাফি কি : কেন করা হয়
এন্ডোস্কোপি কি ? এন্ডোস্কোপির নিয়ম
কোলোনোস্কোপির প্রস্তুতি

কোলনের ভেতর সবসময় মল ভর্তি থাকে । এমনকি যাদের নিয়মিত বাথরুম হয় তাদেরও । পেটে যত মল জমা থাকে তার একটি অংশ মাত্র টয়লেটের সময় বেরিয়ে আসে। কোলনের ভেতর মল থাকলে আসল রোগ চোখে দেখা সম্ভব হয়না । একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেটের সব মল বের করে দেয়া হয় কোলনস্কপির প্রস্ততি স্বরুপ । সাধারণতো ডাক্তার রুগির সাথে কথা বলে কোলনস্কপির প্রস্ততি দিয়ে থাকেন । তবে সাধারণভাবে পরীক্ষার আগের দিন দুপুরে আঁশ জাতীয় ও শাকসবজি / ফলমূলবিহীন হালকা খাবার খেতে হবে । এরপর বিকেল থেকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয় । যার ফলে অনেকবার পাতলা মল হয়ে শেষ পর্যন্ত পানির মতো মল হলে বুঝতে হবে প্রস্তুতি সঠিকভাবে সম্পান্ন  হয়েছে । এজন্য রোগীকে একটি প্রিপারেশন শিট দেওয়া হয় । যেখানে সমগ্র প্রক্রিয়াটির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দেওয়া থাকে । এ প্রস্তুতি শিটে  বৃদ্ধ, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের ব্যাপারে আলাদা আলাদা নির্দেশনা থাকে । প্রস্তুতির ওষুধ গ্রহন করার পর শুধু পানি বা খাবার স্যালাইন খাওয়া যাবে । অন্য কোনো ধরনের খাবার গ্রহন করা  সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয় । পরীক্ষার পরপর নরম খাবার গ্রহন করা যায় । এবং পরবর্তীতে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যায় ।

কোলোনোস্কোপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

কোলনস্কপি করার পর পেটে গ্যাস হয়েছে বলে মনে হতে পারে তবে দ্রুত ঠিক হয়ে যায় ।

কোলনস্কপির সময় যদি বায়োপসি নেওয়া হয় তবে মলদ্বার থেকে ১ বা ২ দিন হালকা রক্তপাত হতে পারে । রক্তপাত যদি বেশি হয়, সেইসাথে তলপেটে ব্যাথা ও জ্বর আসে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া  উচিত ।

Related posts

গাউট বা গেঁটে বাতের কারণ , লক্ষণ ও চিকিৎসা

jibondharaa

গর্ভপাতের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায় ।

jibondharaa

ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ সমূহ, ঝুঁকি বেশি যাদের

jibondharaa

Leave a Comment